মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর ও মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্প সম্পর্কিত খুঁটিনাটি তথ্য
মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর ও মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্প সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য নিম্নে উপস্থাপন করা হলো।
মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর
অনুমোদন: একনেকে অনুমোদন ১০ মার্চ, ২০২০
অবস্থানঃ মাতারবাড়ি, মহেশখালী, কক্সবাজার
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানঃ কনসোর্টিয়াম, জাপান
উন্নয়ন সহযোগী: মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর করতে সহায়তা করছে জাইকা, জাপান।
নির্মাণ কাজ শুরুঃ ১৬ নভেম্বর, ২০২০
সম্ভাব্য উদ্বোধন: ডিসেম্বর, ২০২৬
মালিকানাঃ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ
গভীরতাঃ মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের গভীরতা ১৬ মিটার
সম্ভাব্য ব্যয়ঃ ১৭,৭৭৭.১৬১৩ কোটি টাকা।
প্রকল্প সাহায্যঃ ৬৭৪২.৫৬৭৯ কোটি টাকা। নিজস্ব অর্থ ২২১৩.২৪৯৪ কোটি টাকা। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ৮৯৫৫.৮১৭৩ কোটি টাকা।
জেটি নির্মাণ
মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দরে ৩০০ ও ৪৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের ২টি টার্মিনাল থাকবে। এর একটি হবে বহুমুখী টার্মিনাল ও অপরটি হবে কন্টেইনার টার্মিনাল। এছাড়া বন্দরের সাথে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হবে। একসঙ্গে ৮ হাজার কন্টেইনারবাহী জাহাজ বন্দরে ভিড়তে পারবে।
কন্টেইনারে সাশ্রয়
চট্টগ্রাম বন্দরের তুলনায় মাতারবাড়ি সমুদ্রপথে প্রতি ২০ ফুট লম্বা কন্টেইনারে খরচ সাশ্রয় হবে ১৩১ ডলার এবং ৪০ ফুটের কন্টেইনারে সাশ্রয় হবে ১৯৭ ডলার।
পণ্য খালাসে কম জাহাজের প্রয়োজন
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, এই বন্দরে ২০২০ সালে ১ হাজার ৩৭৮টি জাহাজে ২৬ লাখ কন্টেইনার আনা-নেয়া হয়েছে। গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের ফলে এই পরিমাণ কন্টেইনার পরিবহণে ১৬১ থেকে ২০০ টি জাহাজ প্রয়োজন হবে।
চট্টগ্রাম বন্দরের উপর চাপ হ্রাস
দেশের মোট বৈদেশিক বাণিজ্যের ৯২ ভাগ চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে সম্পন্ন হয়। এতে বন্দরের চারটি টার্মিনাল সম্পূর্ণরূপে ব্যবহৃত হয়। যার কারণে এই বন্দরে পণ্য আনা নেয়ার পরিমাণ বৃদ্ধির কোনো উপায় নেই। তাই চট্টগ্রাম বন্দরের উপর চাপ কমাতে মাতারবাড়ি বন্দর বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
পণ্য খালাসের সময় হ্রাস
চট্টগ্রাম বন্দরে চীন থেকে আসা জাহাজের পণ্য খালাস করতে প্রথমে জাহাজ থেকে লাইটারে এবং পরে লাইটার থেকে জেটিতে আনা হয়। ফলে ৩ মাসের মতো সময় লেগে যায়। মাতারবাড়িতে জাহাজ থেকে সরাসরি বন্দরে পণ্য খালাস করানো যাবে। ফলে সময় এক-তৃতীয়াংশ হ্রাস পাবে।
মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্প
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানঃ সুমিতোমো কর্পোরেশন, জাপান। তোশিবা কর্পোরেশন, জাপান। আইএইচআই কর্পোরেশন, জাপান।
অবস্থানঃ মাতারবাড়ী, মহেশখালী, কক্সবাজার। ক্ষমতা ১২০০ মেগাওয়াট (৬০০ মেগাওয়াটের ২ ইউনিট)।
নির্মাণ কাজ শুরুঃ ২২ আগস্ট,২০১৭ [কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিপিজিসিবিএল)]
জ্বালানিঃ কয়লা
মালিকানাঃ বিদ্যুৎ বিভাগ
সম্ভাব্য উদ্বোধনঃ জানুয়ারি, ২০২৪
উন্নয়ন সহযোগীঃ জাইকা, জাপান
ডিপিপি অনুমোদনঃ ১২ আগস্ট, ২০১৪।
সম্ভাব্য ব্যয়ঃ প্রাক্কলিত ব্যয় ৫১ হাজার ৮৫৪.৮৮ কোটি টাকা।
প্রকল্প সাহায্য ৪৩ হাজার ৯২১.০৩ কোটি টাকা। বাংলাদেশ সরকার ৬,৪০৬.১৬ কোটি টাকা এবং কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি বাংলাদেশ লি. এর নিজস্ব অর্থায়ন- ১,৫২৭.৬৯ কোটি টাকা।
বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন
মাতারবাড়ি থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য চকরিয়া হয়ে চট্টগ্রামের হাটহাজারী পর্যন্ত ১৫০ কিলোমিটারের ৪০০ কিলোভোল্ট (কেভি) ধারণ ক্ষমতার গ্রিড সঞ্চালন লাইন টানা হচ্ছে। এছাড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণকালীন সময়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও স্থানীয় গ্রামীণ জনপদের বিদ্যুতায়নের লক্ষ্যে চকরিয়া-মাতারবাড়ী ১৩২ কেভি সঞ্চালন লাইন ও মাতারবাড়ী ১৩২/৩৩ কেভি সাব-স্টেশন নির্মাণসহ মাতারবাড়ী ও ধলঘাটা এলাকায় বিদ্যুতায়নের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
পরিবেশ দূষণরোধে ব্যবস্থা
সাগরের পানি প্লান্টে ব্যবহারের ফলে সালফার ডাই অক্সাইড উৎপন্ন হয়, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। এজন্য সাগরের পানি ব্যবহারের পূর্বে ডি সালফারাইজেশন মেথডের মাধ্যমে সালফার আলাদা করে তা ব্যবহার করা হবে। কয়লা পোড়ানোর ফলে নাইট্রাস অক্সাইড তৈরি হয়, তাই লোরেল বার্নার স্থাপন করা হবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নির্গত ছাই কমানোর জন্য ইলেক্ট্রিক প্রিসিপিটেটর ব্যবহার করা হবে।
আরও পড়ুন- মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রকল্প সম্পর্কিত খুঁটিনাটি তথ্য